ওষুধ সেবনের কিছু কমন নিয়ম কানুন


পারতপক্ষে ওষুধ না খেয়ে থাকতে পারলে উত্তম, তারপরও ওষুধ সেবন যেহেতু করতেই হয়, তাহলে ওষুধ সেবনের কিছু কমন নিয়ম-কানুন রয়েছে যা জানা থাকা উচিত। অনেক সময় চিকিৎসকরাও পাশে লিখে দিতে ভুলে যায়-

(এক). ব্যথানাশক ওষুধ যেমন: ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম, প্যারাসিটামল, এসিক্লোফেনাক,ন্যাপ্রোক্সেন, আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন ও কিটোরোলাক ইত্যাদি ভরা পেটে গ্রহণ করা উত্তম।

(দুই). প্রোটন পাম্প ইনহেবিটর যেমন: ওমিপ্রাজল, ল্যানসোপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল, ইসোমেপ্রাজল ইত্যাদি খাবারের আগে সেবন করা উত্তম।

(তিন). ঠাণ্ডা-সর্দি বা অ্যালার্জির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন, যেমন: লোরাটাডিন, সেটিরিজিন, ফেক্সোফেনাডিন খালি পেটে গ্রহণ করলে এর কার্যকারিতা বেশি হয়। 

(চার). অ্যান্টাসিড খাবারের পর পর না খেয়ে ৩০ মিনিট পর খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

(পাঁচ). সিপ্রোফ্লোক্সাসিন খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে সেবন করাই ভালো। সিপ্রোফ্লক্সাসিন গ্রহণের ২ ঘণ্টার মধ্যে দুগ্ধজাত খাবার বা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, আয়রন বা জিংকযুক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ না। 

(ছয়). ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, আয়রন ট্যাবলেট, মাল্টিভিটামিন খাবার কয়েক ঘণ্টা আগে বা পরে সেবন করা ভালো। 

(সাত). পেনিসিলিন খালি পেটে সেবন করাই ভালো। 

(আট). কিছু ওষুধ যেমন- কোট্রিম এবং ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, সেবন করলে বেশি পরিমাণে পানি পান করা উচিত।

(নয়). একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ওষুধ সেবন করলে ওষুধের মধ্যে প্রতিক্রিয়ায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওষুধের কার্যকারিতা কমতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওষুধের কার্যকারিতা বাড়তে পারে। এ দুটোই বেশ ক্ষতিকর। তাই একই সাথে অনেকগুলো মেডিসিন না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী খাওয়া উচিত।

(দশ). হাঁপানি আছে এমন ব্যক্তির ব্যথানাশক ওষুধ, বেটা ব্লকার-এটেনোলল, প্রোপানোলল সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

(এগারো). গর্ভাবতী এবং দুগ্ধদানকারী নারীকে ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী যে কোন মেডিসিন খাওয়া উচিত, কেননা অনেক মেডিসিন আছে যা ভ্রুণের ক্ষতি করে। আবার অনেক মেডিসিন আছে যা মিল্কের সাথে সিক্রেশন হয়ে নবজাতকের ক্ষতি করার সম্ভাবনা থাকে।

(বার). আটা ময়দা দিয়ে তৈরি অচেনা ঔষধ একথায় আন রেজিস্ট্রার্ড কোন কোম্পানির মেডিসিন খাবেন না। 

(তের). মেডিসিন খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই মেয়াদ দেখে নিবেন। 

(চৌদ্দ). চিকিৎসকের দেয়া নিয়ম অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় সঠিক নিয়মে যথাসময়ে মেডিসিন খাবেন।

(পনের). যে কোন বিষয় না বুঝলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

মনে রাখবেন, প্রত্যেক মেডিসিনের কম বেশি সাইড ইফেক্ট রয়েছে,  তাই কথায় কথায় ওষুধ খাওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যাতিত ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।


[ডা: মোহাম্মদ আলী, চীফ কনসালট্যান্ট, বিজিএমইএ]

Post a Comment

Previous Post Next Post