ব্রণ : সুন্দর মুখশ্রীর দৃষ্টিকটু যন্ত্রনা


ব্রণ যৌবনের অবাঞ্ছিত এক সমস্যা । সুন্দর মুখশ্রীর ওপর জাপটে বসে থাকে এক দৃষ্টিকটু যন্ত্রনা। ১৩ বছর থেকে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত প্রায় ৯০% এরই এ রোগটি কমবেশি হয়ে থাকে। ২০ বছর বয়সের পর নিজে থেকেই ভাল হয়ে যায়। ব্রনের মূলে যে জিনিস তার নাম কমেডো (চাপ দিলে তাতে ভাতের দানার মতো বের হয়), তবে কখনও কখনও শুধু দানা আকারে,পুজ সহকারে গহ্বরযুক্ত দানা বা বড় গোটার আকারে দেখা দিতে পারে। সাধারনত মুখমন্ডলেই (গাল,নাক,কপাল,থুতনি) বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা দেয়। তা ছাড়া ঘাড়, শরীরের উপরের অংশে, হাতের উপরের অংশে ইত্যাদি স্থানেও ব্রন হয়ে থাকে।


কারন

প্রোপাইনি ব্যাকটিরিয়াম একনিস নামক এক ধরনের জীবানু স্বাভাবিকভাবেই লোমের গোড়ায় থাকে।এন্ড্রোজেন হরমোনের প্রভাবে সেবাম-এর নিঃসরণ (মাথা,মুখ ইত্যাদি জায়গায় তেলতেলে ভাব) বেড়ে যায় এবং লোমের গোড়াতে উপস্থিত জীবানু সেবাম থেকে মুক্ত ফ্যাটি এসিড তৈরি করে। এসিডের কারনে লোমের গোড়ায় প্রদাহের সৃষ্টি হয় এবং লোমের গোড়ায় কেরাটিন জমা হতে থাকে।বয়োঃসন্ধিকালে তরুন-তরুণীদের শরীরে স্বাভাবিকভাবেই এন্ড্রোজেন হরমোন নিঃসরন বেড়ে যায় বিধায় এই বয়সে বেশী ব্রন দেখা যায়।প্রজেস্টেরন হরমোনও সিবাম নিঃসরন বাড়িয়ে দেয়। কোন কারনে সিবাসিয়াস গ্রন্থিতে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলেও ব্রন হয়।


প্রকারভেদ

  • ট্রপিকাল একনি-অতিরিক্ত গরম এবং বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হলে পিঠে,উরুতে ব্রন হয়ে থাকে।
  • পিমিন্সট্রুয়াল একনি- কোনো কোনো মেয়েদের মাসিকের সপ্তাহখানেক আগে ৫-১০ টির মতো ব্রন মুখে দেখা দেয়।
  • একনি কসমেটিকা- কোনো কোনো প্রসাধনি অনেকদিন ব্যবহারে মুখে অল্প পরিমানে ব্রন হয়ে থাকে।
  • একনি ডিটারজিকেনস- মুখ অতিরিক্তভাবে সাবান দিয়ে ধুলেও(দৈনিক ১-২ বারের বেশি) ব্রনের পরিমান বেড়ে যায়।
  • স্টেরয়েড একনি- স্টেরয়েড ওষুধ সেবনে হঠাৎ করে ব্রন দেখা দেয়।
  • মুখে স্টেরয়েড ক্রিম, যেমন - ডেক্সামিথাসন,বিটামিথাসন প্রেডনিসোলন জাতীয় ক্রিম একাধারে অনেকদিন ব্যবহারে ব্রনের পরিমান বেড়ে যায়।


পরামর্শ

  • ফেসিয়াল,স্টিমবাথ এবং মুখের বাষ্পভাব দিলে সুফল পেতে পারেন।
  • মিষ্টি ও গরম মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
  • অতিরিক্ত রাত্রিজাগরন করবেন না।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন,
  • শাক-সবজি, টাটকা মৌসুমি ফল খান।
  • নখ দিয়ে ব্রণ খুট বেন না , ইনফেকশন হতে পারে , ও স্থায়ী দাগ হয়ে যেতে পারে।

বাজারে হাজারও ক্রিম/লোশন আছে , টিভি অন করলেই মাথা খারাপ হবার অবস্থা। এই হারবাল ক্রিম, ওমুক ভাইয়ের এরোমা । সবাই বলে ব্রন থেকে চির মুক্তি পেতে তাদের পন্যই সেরা। আসল কথা হল ওই পন্য গুলো ক্ষতি ছাড়া, ব্রন ভাল করার কোনো ক্ষমতা রাখেনা। ব্রন থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের এর পরামর্শ নিন।


লেখক: মোঃ ফাইজুল হক

Post a Comment

Previous Post Next Post