গর্ভাবস্থায় মায়েদের যেসব ইনফেকশন তার অনাগত সন্তানের মধ্যে চলে আসতে পারে

গর্ভাবস্থায় মায়েদের যেসব ইনফেকশন তার অনাগত সন্তানের মধ্যে চলে আসতে পারে, সেসব ইনফেকশনকে সংক্ষেপে টর্চ ইনফেকশন (TORCH) বলে।

এখানে টর্চের Elaboration করলে দাড়ায়
T - Toxoplasm
O -Other infection
R- Rubella
C- Cytomegalo Virus
H- Herpes Type 2.


দ্বিতীয় পয়েন্ট Other infection এর লিস্টে ছিল - Chlamydias, HIV, Syphilis ইত্যাদি। কিন্তু সম্প্রতি এর মধ্যে যুক্ত হয়েছে নতুন এক ভাইরাসের নাম। তার নাম জিকা ভাইরাস(Zika Virus). জিকা ভাইরাস পুরা আমেরিকা মহাদেশের টনক নড়িয়ে দিয়েছে। মাতৃকালীন ইনফেকশন হয়ে জন্ম নেয়া বাচ্চার মৃত্যু মোটামুটি অবধারিত। আর আজকের নিউজ হলো- এর ভ্যাক্সিন বের হতে আরো প্রায় ১০ বছর লেগে যাবে।

Zika Virus হলো ফ্ল্যাভিভাইরাসের জাত। ইনফেকশন মাত্রাও খুবি কম। এর ইনফেকশন ছড়ানোর স্টাইল পুরাই ডেঙ্গু ভাইরাসের কপি পেস্ট।

এডিস মশার কামড়ে এই জীবানু ছড়ায় মানুষের শরীরে। লিম্ফ নোডের মাধ্যমে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। তার পর এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই জ্বর, শরীর ব্যাথা, শরীরে লাল দানা তৈরি করে। অনেক সময় একে ডেঙ্গু হিসেবেই চিকিৎসা করা হয়। ভালোও হয়ে যায়। কারন চিকিৎসা পদ্ধতিও একই।

গর্ভাবস্থায় যে কোনো ট্রাইমেস্টারে এই রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। মায়ের সিম্পটম খুব সামান্য হলেও জীবানু ঢুকে পড়ে বাচ্চার শরীরে। ফলে জন্মের পরে বাচ্চার ক্ষুদ্র মাথা নিয়া জন্মায় এবং জন্মের কিছুদিন পরেই বাচ্চা মারা যায়। ডেঙ্গুর সাথে এর অমিল হলো- এটা শুধু Mild Disease তৈরি করে। আর ডেঙ্গু সিরিয়াস হিমোরেজিক ডিজেজ করে শকে নিয়ে যেতে পারে। চিকনগুনিয়া ভাইরাসের সাথেও এর মিল বিদ্যমান।

আম্রিকা মহাদেশে এই রোগের বিস্তার রোধে রেড এলার্ট জারি করেছে । দেশ থেকে অন্য দেশে পাচার না হওয়ার জন্য বিমানবন্দরে টাইপ-২ এলার্ট সিস্টেম চালু করা হয়েছে ।

জুনোটিক ডিজেজ বাংলাদেশে পাচার হয় খুব সহজে। তাই সতর্কতার সাথে এই রোগ থেকে সাবধান থাকতে হবে। গর্ভাবস্থার জিকা রোগের ইনফেকশন থেকে এডিস মশাকে মারার ব্যবস্থা করুন। একে ডেঙ্গু নির্মুলের ডাবল বেনেফিট হিসেবে ধরে নিন।


লিখেছেন- ডাঃ সাঈদ সুজন

Post a Comment

Previous Post Next Post