শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির উপায়


প্রত্যেক মা-বাবাই বলেন আমার বাচ্চা খেতে চায়না, লম্বা হয় না ,শরীর শুকিয়ে যায়, ওজন কমে যাচ্ছে, আমার শিশু ঠিকমতো বাড়ছে তো? স্বাস্থ্য উন্নতি হয় না , এ প্রশ্ন আমরা প্রায়শই শুনতে পাই। 

মনে রাখতে হবে,

"সচেতন মাতাই, বাচ্চার বড় চিকিৎসক"

শিশু কতটা লম্বা হবে, তা বেশির ভাগ নির্ধারিত হয়ে যায় মাতৃগর্ভে থাকতেই। শিশুর জিনগত বৈশিষ্ট্য এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

অর্থাৎ বংশগতির ধারায় মা-বাবা থেকে শিশুতে প্রবাহিত বৈশিষ্ট্য অনেকাংশ ঠিক করে দেয়,শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি কতটা হবে । তবে জন্মগতভাবে কোনো শিশু অসুস্থ হলে, তার শারীরিক বৃদ্ধি ও হয়। বাকিটা নির্ভর করে শিশুর পরিবেশগত অবস্থা ও জন্মের পরবর্তী সুস্থতার ওপর। এক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় মায়ের সুস্বাস্থ্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।


জন্মের সময় শিশুর ওজন যদি স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয় এবং দুই বছর বয়সের মধ্যে স্বাভাবিক বৃদ্ধি না ঘটলে পরবর্তী সময় শিশুটির শারীরিক বৃদ্ধি ততটা হয় না।

এমন ক্ষেত্রে ছোট থেকেই শিশুকে গ্রোথ হরমোন দিয়ে লম্বা করার চিকিৎসা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ।


সুস্থ ও স্বাভাবিক আকৃতি নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুর ক্ষেত্রে সঠিক পুষ্টি এবং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা ভবিষ্যতে তার কাঙ্খিত,শারীরিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে। তবে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা অনেক সময় শিশুর পর্যাপ্ত শারীরিক বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্থ করে। এছাড়া কিছু হাড়ের রোগ ও কোনো কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া উচ্চতা বৃদ্ধির অন্তরায় হতে পারে। 


বাবা-মায়ের উচ্চতা তুলনামূলক কম হলে শিশুর শারীরিক উচ্চতা ও কম হতে পারে। আবার কোনো কোনো শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ছোটবেলায় তুলনামূলক কম হলেও পরবর্তী সময়ে বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় স্বাভাবিক উচ্চতা পায়। তবে সে সম্ভাবনা আগে থেকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা আবশ্যক।

কিন্তু ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণত মেয়ে শিশুর ১৪বছর ও ছেলে শিশুর ১৬বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।


শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি সন্তোষজনক না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শারীরিক বৃদ্ধি ধীর হলে চিকিৎসকের কারণ অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। শিশু ঘন ঘন অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসা ও প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় প্রথমে ওজন কমবে ও পরে উচ্চতা বৃদ্ধি ব্যাহত হবে।

নিরাময়যোগ্য জন্মগত অসুখের চিকিৎসা যতদ্রুত সম্ভব করতে হবে। শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার আরেকটি বড় কারণ দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টি। কাজেই জন্মের পরপর শিশুকে দুধ খাওয়াতে হবে । ছয় মাস বয়স পর্যন্ত তাকে শুধু মায়ের বুকের দুধ দিতে হবে।  পরে ধীরে ধীরে সুষম খাবার অভ্যস্ত করে তুলতে হবে । কোন অবস্থায় তাকে বাহিরের খাবার দেওয়া যাবে না।

বাচ্চাদের নির্দিষ্ট সময়ে গোসল, একটু রৌদ্রে বসানো, একটু খেলাধুলা, নির্দিষ্ট সময়ে কম করে বার বার খাওয়াতে হবে, ফলমূল কমপক্ষে ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন তারপর খাওয়াবেন।


-[ডা:মোহাম্মদ আলী, চীফ কনসালট্যান্ট, বিজিএমই]


শিশুর ওজন ও উচ্চতা বৃদ্ধির চার্ট



Related Articles


Post a Comment

Previous Post Next Post