শিশুদের খেতে না চাওয়ার কারণ ও তার সমাধান


বাবা-মা'দের একটি কমন অভিযোগ হলো বাচ্চা খাবার খেতে চায়না। তাই আজকের লেখা তাদের জন্য।


কারণসমূহ:

এক) শিশু অসুস্থ হলে খেতে চায় না।

দুই) মা শিশুকে জোর করে তাড়াতাড়ি খাওয়াতে চান, সময় নিয়ে খাওয়াতে চান না।

তিন) শিশু যখন ক্লান্ত থাকে বা যখন ঘুম ঘুম ভাব থাকে তখন সে খেতে চায় না।

চার) শিশু যখন খেলনা বা বন্ধুদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে তখন সে খেতে চায় না।

পাঁচ) শিশু কি ধরনের খাবার খাবে এসব তার বয়স অনুযায়ী না হলে সে খেতে চাইবে না।

ছয়) ৬ মাসের পর থেকে প্রথম শিশুকে খাবার দিলে মুখ থেকে সে খাবার বের করে দেয়, মা বা পরিবারের অন্য সদস্য মনে করে শিশু খেতে চাচ্ছে না।

সাত) শিশুর পেট বেশ ছোট ,শিশু যদি খাবার আগে চিপস, জুস ,পানি বা অন্য কোনো তরল খাবার দিয়ে পেট ভরিয়ে ফেলে তাহলে সে খেতে চাইবে না।

আট) শিশুর খাবার বেশ পাতলা করে তৈরি করা হলে তাতে শিশুর পেট ভরে যায় কিন্তু এতে পুষ্টির পরিমাণ কম থাকে।


সমাধানসমূহ:

  • শিশুরা তাদের পিতামাতার কাছ থেকেই শেখে।তাই অভিভাবকদের উচিত খাওয়ার সময় বাচ্চাদের সাথে একত্রে বসে খাওয়া।
  • তাড়াতাড়ি করার জন্য শিশুকে জোর করা যাবে না, তার মুখে যতটুকু খাবার আছে সেটা গেলা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কে মায়ের কাজে সাহায্য করতে বলতে হবে।
  • শুরুতেই খাওয়া শেখার সময় শিশু এমন করতে পারে,এটা স্বাভাবিক। সেজন্য প্রথম কয় মাস শিশুকে বেশ সময় নিয়ে খাওয়াতে হবে। 
  • শিশুর যেটা খেতে পছন্দ করবে তার জন্য সেটা রান্না করতে হবে, সেটা যেন নরম হয় এবং বারে বারে তাকে খেতে দিতে হবে। যখন সে সেরে উঠবে তখন তাকে বিভিন্ন ধরনের খাবার, একটু বেশি করে বারে বারে দিতে হবে।
  • সে জন্য শিশুর খাবার পাতলা করে তৈরি করা উচিত নয়। তাকে চটকানো খাবার বা তার বয়স অনুযায়ী ঘনত্বের খাবার দিতে হবে ।
  • সেজন্য খাবার আগে শিশুর পেট এসব জিনিস দিয়ে ভর্তি করা উচিত নয় । খাবার এবং নাস্তার মাঝখানে দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিরতি থাকা ভালো,সেজন্য পরবর্তী খাবার দেওয়ার জন্য ২-৩ ঘণ্টা দেরি করা উচিত।
  • খেলার সময় তাকে খাওয়ানো উচিত নয়।  শিশু খাওয়ার অমনোযোগী হয় এমন সবকিছু সরিয়ে ফেলতে হবে।
  • শিশুর বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার খাবারের অভ্যাস ও পরিবর্তন করতে হবে যেমন, খাবারের-ধরণ পাতলা নরম ও শক্ত খাবারের স্বাদ ইত্যাদি।
  • সুষম, স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস গঠন করুন।


- [ডা. মোহাম্মদ আলী, চীফ কনসালট্যান্ট, বিজিএমইএ]

Post a Comment

Previous Post Next Post