শিশুর জ্বর : করনীয় ও বর্জনীয়


অনেক সময় রোগীর মা- বাবা বা আত্মীয়স্বজন মোবাইলে কল  দিয়ে বলে স্যার বাচ্চার অনেক জ্বর, ১০২°-১০৩°  হবে, ওষুধ দিন। তখন তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করি, আপনি কি বাচ্চার জ্বর পরিমাপ করেছেন, থার্মোমিটার দিয়ে? তখন ওনারা বলেন, না আমি বাচ্চার শরীরে হাত দিয়ে জ্বর অনুভব করেছি।

অনেকে আবার জ্বরের ওষুধ প্যারাসিটামল সিরাপও খাইয়ে দেন বাচ্চাকে, আবার অনেকেই এ্যান্টিবায়োটিক ( Cef-3, Azyth)  খাওয়ান। এসব সঠিক নয়!


আমাদের করনীয়:

১. বাচ্চার জ্বর হলে সর্বপ্রথম নার্ভাস হওয়া যাবে না, মানসিক ভাবে দূর্বল হওয়া যাবে না।

২. থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর পরিমাপ করতে হবে। 

৩. অনেকে বলেন, ওনি জ্বর মাপতে জানেন না, জ্বর পরিমাপ করা একদম সহজ একটি বিষয়,  দরকার হলে যিনি জানেন ওনার কাছ থেকে সহায়তা নিবেন।

৪. বাচ্চার যখন জ্বর হবে তখন বাচ্চার জ্বর সঠিকভাবে পরিমাপ করে ডাক্তারের পরামর্শ মতে প্যারাসিটামল সিরাপ বা ড্রপ খাওয়াবেন।

৫. কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে বাচ্চার হাত -পা, শরীর মুছে দিবেন(১৫-২০ মিনিট), তবে ঠান্ডা পানি ব্যবহার না করা উত্তম কারন এতে বাচ্চার ঠান্ডা লাগার সম্ভবনা থাকে।

৬. বাচ্চার বয়স ৬ মাসের বেশি হলে ঘন ঘন তরল খাবার, ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার দিবেন। ৬ মাসের কম হলে বেশি বেশি মায়ের বুকের দুধ দিবেন। 

৭. বাচ্চাকে হালকা -পাতলা পোশাক পরিধান করাবেন।


সর্তকতা:

বাচ্চাকে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোন ধরনের এ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না।

বাচ্চার শরীর গরম মানে সবসময় জ্বর হবে তা কিন্তু নই, আপনি থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মাপবেন  জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়াবেন অন্যথায় খাওয়াবেন না।


কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন:

১. শিশুর যদি ৭২ ঘন্টার (৩ দিনের) মধ্যে জ্বর না কমে,

২. জ্বরের সাথে খিঁচুনি হলে,

৩. শিশু অবিরাম কাঁদতে থাকলে,

৪. শিশুর ঘাড় শক্ত হয়ে গেলে,

৫. জ্বরের সাথে যদি বাচ্চার শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, বমি হলে,

৬. জ্বর কমে যাবার পরও যদি শিশু উত্তেজিত থাকে।

৭. জ্বরের সাথে বাচ্চার গায়ে, বুকে, পিঠে যদি (Rash) দেখা দিলে।


- [ডাঃ মোহাম্মদ আলী, চীফ কনসালটেন্ট, বিজিএমই]

Post a Comment

Previous Post Next Post