ধূমপায়ীদের জন্য কিছু কথা বলবো। জানি,ধূমপানের পক্ষে তাঁদের অসংখ্য যুক্তি থাকে। এসব যুক্তি নিতান্তই অসার। ধূমপায়ীরা,মানুষ পারেনা এমন কিছু নেই, আর আপনারা সামান্য সিগারেট ছাড়তে পারবেন না কেন? মনে জোর আনুন। আপনি মানুষ। আপনার খারাপ নেশাটাকে দমন করার সাধ্য নেই আপনার যা কিনা আপনার পরিবারের এবং আপনার চরম ক্ষতি করে?
ছোট্ট একটি গল্প শোনেন,
আমার চেম্বারে এক বৃদ্ধ মহিলা এসেছে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কাশি। উনার সাথে কাউন্সিলিং করে জানতে পারলাম উনি অনেক বছর পর্যন্ত ধূমপান করে।
আমি বললাম আপনি ধূমপান করেন কেন? উনি আমাকে বলে বাবা এগুলো খেয়ে বেঁচে আছি, এটা খেলে আমার কাশিটা অনেকটা কম থাকে আমি বললাম ধূমপান করলে কি উপকার কোন ভিটামিন ক্যালসিয়াম আছে নাকি?
উত্তরে উনি বলে অভ্যাস করে ফেলেছি ভাত না খেয়ে থাকা যায় কিন্তু ধূমপান ছাড়া থাকা যায়না।
এরকম মহিলা শত শত পাওয়া যাবে খুঁজলে।
নিম্নে ধূমপানের অপকারিতা দেওয়া হল-
১. সিগারেট,বিড়ি করোনা হওয়ার সম্ভাবনাকে অন্যদের চেয়ে ১৪% বাড়িয়ে দেয়।
২. ব্রেইন ক্যান্সার করে।
৩. খাদ্যনালীর ক্যান্সার করে।
৪. পাকস্থলীর ক্যান্সার করে।
৫. অন্ত্র অর্থাৎ কোলন ক্যান্সার করে।
৬. ফুসফুসের ক্যান্সার করে।
৭. হার্ট অ্যাটাক করায়।
৮. স্ট্রোক ও প্যারালাইসিসের জন্য দায়ী।
৯. শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কমিয়ে দেয়।ফলে যে কোন ইনফেকশন বেশি হয়।
১০. পেটের মাংসপেশির অাঁশগুলোকে ফাঁক ফাঁক করে দেয়। ফলে মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায়।দুর্বল মাংসপেশি ভেদ করে পেটের নাড়িভুড়ি বাইরে ঠেলে বের হয়ে আসে।এ অবস্থাকে হার্নিয়া বলে।
১০. আপনি বাইরে বিড়ি-সিগারেট খেয়ে মুখখানা মুছে বাসায় এলেন। ভাবলেন,বাসার মানুষ তো নিরাপদ।মোটেও না। আপনার বাবা-মা-ভাই-বোন-স্ত্রী-আদরের সন্তান আপনার চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে। "আপনার জন্য সন্তানের অকাল মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকে কিংবা ক্যান্সারে "_ কেমন লাগছে শুনতে? অথচ আপনি জানতে ই পারলেন না, আপনার এই খারাপ অভ্যাসের জন্যই অকাল মৃত্যু হয়েছে আপনার প্রিয়জনের।
কার মূল্য বেশি আপনার কাছে? নিজের ও প্রিয়মুখগুলোর জীবনের চাইতেও অনেক প্রিয় বুঝি এই বিড়ি কিংবা সিগারেট?
এক মুহূর্ত! শুধু এক মুহূর্তের প্রতিজ্ঞায় আপনি সারা জীবনের জন্য সিগারেট /বিড়ি ছেড়ে দিন। নিজে বাঁচুন,পরিবার-পরিজনকে বাঁচান। প্রথম কয়েকদিন খুব কষ্ট হবে,সেই কষ্টকে জয় করে নিন। আপনি পারবেনই।
- [ডাঃ মোহাম্মদ আলী, চীফ কনসালট্যান্ট, বিজিএমইএ]
Post a Comment