গ্যাস্টিকের সমস্যা ও সমাধান


গ্যাস্ট্রিক হলে প্রথমেই যে সব লক্ষণ ধরা পড়ে এমনটা নয়। হেলিকোব্যাকটর ফাইলোরি নামক এক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবেই গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যার সূত্রপাত হয়। তবুও প্রাথমিক যে লক্ষণ গুলি দেখে আপনি বুঝবেন যে গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যায় ভুগছেন।


বমি- বেশিক্ষণ পেট খালি থাকলেই যকৃৎ থেকে যে বমি নির্গত হয় তা গলব্লাডারে জমা হয়। এই তরল হজমে বাধা দেয়। ফলে বারবার বমি, পিত্তবমির মতো লক্ষণ দেখা যায়। এছাড়াও খাবারের সংক্রমণ থেকে প্রায়শই পেটে ইনফেকশনের মতো সমস্যা দেখা দেয়। অ্যাসিড বেশিমাত্রায় ক্ষরণ হয় বলে গলা জ্বালা, পেট ব্যথার মতো সমস্যা দেখা যায়।


ভিটামিন বি১২ এর অভাব- ভিটামিন বি ১২ এর অভাব অনেক সময়ই আমরা বুঝতে পারি না। ডি এন এ এবং রক্ত সঞ্চালনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এছাড়াও ডাইরিয়া,কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, ডিপ্রেশন, শ্বাসের সমস্যা দেখা যায়। যাঁরা গ্যাসট্রিকের সমস্যার ভুগছেন তাঁরা যদি ডিম,লো ফ্যাট মিল্ক, লো ফ্যাট মিল্কের দই, চিকেন ব্রেস্ট খেতে পারেন তাহলে উপকার পাবেন।


ডায়েরিয়া ও পেটে ব্যথা- প্রায়শই ডায়েরিয়া হয়? আপনি ভাবেন বোধহয় খাবার সমস্যা বা পানি থেকে কোনও কারণে হয়েছে। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই যদি এই সমস্যা দেখা যায় তাহলে বুঝতে হয়ে গ্যাস্ট্রিকের জন্য এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই সঙ্গে হঠাৎ করে পেট ব্যথা, বমি, ফুড পয়োজন মানেই সমস্যা অন্য।


খিদে পেলে খুব দ্রুত পেট ভরে যায়- অনেকক্ষণ হল খিদে পেয়েছে কিন্তু একটু খেলেই মনে হয় আর খেতে পারছি না এ কিন্তু গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ।


অভ্যন্তরীন ব্লিডিং- যদি বুঝতে পেরে থাকেন ভেতরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তাহলে প্রথমেই সতর্ক হল। রক্ত বমি, রক্ত আমাশা, র্কত্ পায়খানা হল এর লক্ষণ।


ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া- বেশি ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, বেশি পরিমাণ লবণ খাওয়া প্রভৃতি কারণে পেটে মেদ জমে। এর ফলে শুধুই যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় তা নয়, প্রায়শই গ্যাস, মেয়েদের মাসিক সংক্রান্ত সমস্যা।


পেটে প্রায়শই ব্যথা- প্রায়শই পেটে ব্যথা হলে তা অবহেলা করবেন না। অনেক কিছুরই লক্ষণ হতে পারে।


উপায়:

সকালে উঠে পানি খাবেন খালি পেটে দুই গ্লাস। 

বেশিক্ষণ ক্ষুধা লাগলে খাবেন এবং খাবার ৩০ মিনিট আগে পানি খাবেন ১ গ্লাস। ভাজাপোড়া কম খাবেন, ফলমূল-শাকসবজি খাবেন। যে কোন খাবার অনেকক্ষণ ধরে চিবিয়ে খাবেন যেন সহজে হজম হয়।


যাদের অতিরিক্ত গ্যাসট্রিকের সমস্যা, তাদের কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত:

(১). খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করে না খেয়ে ধীর স্থির ভাবে খাবার চিবিয়ে খেতে হবে, যাতে খাবারটা ভালোভাবে পরিপাক রসের সঙ্গে মেশে এবং হজম হয়।

(২). ধূমপান বর্জন করুন। কেন ও কোন খাবারে গ্যাস হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন ও তা থেকে বিরত থাকুন।

(৩). বার বার ঢেকুর তুলবেন না।

(৪). সকালে খালি পেটে দুই গ্লাস পানি এবং খাবার পূর্বে পানি খেতে হবে।  কমপক্ষে১০-১২ গ্লাস পানি ।

(৫). সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে।

(৬). অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা থেকে দূরে থাকুন।


এই বিষয়টি নিয়ে বেশি চিন্তা না করে নিজের কাজে বেশি করে মনোনিবেশ করুন।

Post a Comment

Previous Post Next Post