পিঠে বা কোমরে ব্যাথার কারণ ও লক্ষণ


মানবজাতির অন্যতম একটা রোগ হলো পিঠে বা কোমরে ব্যথা বা Back pain। এই ব্যথা তীব্র (কয়েকদিন বা সপ্তাহের জন্য স্থায়ী) কিংবা দীর্ঘস্থায়ী (৩ মাস বা তার বেশি স্থায়ী) হতে পারে। যদি ব্যথাটা পা বা কুঁচকিতে খুব বেশী যন্ত্রণাদায়ক হয় বা খচখচানি সৃষ্টি করে এবং/অথবা মাঝেমধ্যে অবশ হয়ে যায়, দৈনন্দিন চলাফেরায় সমস্যা সৃষ্টি করে কিংবা প্রস্রাব বা মলত্যাগে যন্ত্রনার সৃষ্টি করে তাহলে অনতিবিলম্বে চিকিৎসাগত পরিচর্যা দরকার কারন আপনি ইতিমধ্যেই অনেক দেরি করে ফেলেছেন।


পিঠে ব্যাথা কেন হয়?

১। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা(সামান্য বিশ্রামেই সাধারনত ঠিক হয়ে যায়)।

২। নুয়ে কোন ভারি কাজ করা বা ভারোত্তলন করা বা ভারোত্তলনের চেষ্টা করা।

৩। হঠাৎ পিঠের বা কোমরের পেশীর খিঁচুনি।

৪। আঘাত।

৫। স্লিপড বা হার্নিয়েটেড ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক।

৬। মেরুদণ্ডের অস্থিভঙ্গ।

৭। সায়াটিকা বা স্নায়ু সংকোচন।

৮। বয়সের কারণে আর্থ্রাইটিস।

৯। অস্টিওপোরোসিস (হরমোনগত পরিবর্তন অথবা বিভিন্ন কারণে হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া)।

১০। অটোইমিউন ডিজঅর্ডার।

১১। স্পাইনাল স্টেনোসিস (মেরুদণ্ডগত কোন দেহনালীর সংকীর্ণ অবস্থা)।

১২। মেরুদণ্ডের বিকৃতি।

১৩। ক্যান্সার।

১৪। কখনো কখনো মানসিক চাপও পিঠের ব্যথার কারণ হয় বলে জানা যায়, যা প্রায়শই অবহেলা করা হয়ে থাকে।

১৫। দীর্ঘ্যমেয়াদি বা পুরোনো কিডনি রোগ।

১৬। বয়স্ক মায়েদের জরায়ুর রোগ (উদাহরণঃ ফাইব্রয়েড, মাসিকের ব্যথা বা গর্ভাবস্থা ইত্যাদি)।

১৭। Spinal TB.


পিঠে ব্যথার উপসর্গ বা লক্ষণ কি?

১। বসা, শুয়ে থাকা, ওজন তোলা বা ঝুঁকে পড়লে ব্যথা আরও খারাপের দিকে যায়।

২। পা বা নিতম্বের দিকে পিঠের বা কোমরের ব্যথা ছড়িয়ে পড়া।

৩। পা অথবা কুঁচকিগুলিতে খচখচানি বা অবশ হওয়া।

৪। প্রস্রাব বা মলত্যাগে যন্ত্রনার সৃষ্টি করা ।

৫। বসা, দাঁড়ানো অথবা চলাফেরার সময় পিঠে বা কোমরে শক্তভাব অনুভুত হওয়া।

৬। অনেক সময়ে পিঠের ব্যাথা তলপেট পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় বা ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হয়।


চিকিৎসা

প্রাথমিক অবস্থায় সাধারনত ঔষধ এবং জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনের দ্বারাই এই রোগের অনেকাংশের উপশম ঘটানো সম্ভব। কিছুকিছু ক্ষেত্রে ঔষধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপিও অনেক উপকার বয়ে আনে। তবে রোগের বয়স ও রোগের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথেসাথে চিকিৎসা পদ্ধতিও জটিল হতে থাকে, রোগসৃষ্টির কিছুকিছু কারনের ক্ষেত্রে অপারেশনেরও প্রয়োজন হয়ে থাকে। সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার মান সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এই সমস্যা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া যায়। আর তাই এ ধরনের সমস্যার শুরুতে ডাক্তার দেখান।


লিখেছেন: Dr. Sujan C Paul

Post a Comment

Previous Post Next Post