সিফিলিস (Syphilis) এর কারণ ও চিকিৎসা


যৌনরোগসমূহের মধ্যে অন্যতম মারাত্মক রোগটি হল সিফিলিস। এটি মূলত একপ্রকার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ৷ এই রোগ সাধারনত সহবাসের মাধ্যমেই ছড়ায়৷ এই ব্যাকটেরিয়ায়র নাম ট্রিপোনেমা প্যাল্লিডাম (Treponema pallidum).


যে গর্ভবতী মায়েরা এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের শিকার তাদের ক্ষেত্রে গর্ভজাত শিশু অ্যাবনরমাল হতে পারে বা শিশু জন্মের পরই মারা যেতে পারে।


সিফিলিস সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর ১২ মিলিয়ন মানুষকে আক্রান্ত করে থাকে এবং অসংখ্য লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে থাকে।


কিভাবে ছড়ায় এই রোগ?

রোগের শিকার: নারী পুরুষ উভয়ই

রোগ যেভাবে ছড়ায়:

১. আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে অনিরাপদ যৌনমিলনে

২. রোগাক্রান্ত ব্যাক্তির রক্ত শরীরে গ্রহন করলে

৩. আক্রান্ত মা যে শিশুর জন্ম দেয় সেই শিশু

৪. আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে অনেকক্ষণ শারীরিক সংস্পর্শে থাকলে।

৫. আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে অনেকক্ষণ চুমু খেলে

৬. আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করলে।


মনে রাখবেন, এই রোগ কখনই খাওয়ার পাত্র, চামচ, গামছা বা টাওয়েল, ন্যাপকিন, সুইমিং পুল, বাথটাব, কিংবা ব্যবহৃত জামাকাপড় দিয়ে ছড়ায় না। কারন এই রোগের জীবানু মানুষের দেহের বাইরে বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারেনা।


রোগের প্রকোপ অনুসারে এই রোগের চারটি ধাপ আছে। সেগুলো হল:

১. প্রাইমারি: এই অবস্থায় আক্রান্ত হবার তিন সপ্তাহের মধ্যেই রোগীর শরীরে পোকার কামড়ের মত গোল গোল দাগ দেখা যায়। মাঝে মাঝে এগুলা ব্যাথাহীন এবং শক্ত হয়ে দেখা দেয়। একে শ্যাঙ্কার বলা হয়।


২. সেকেন্ডারি: এই অবস্থায় সাধারনত শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুল্কানির র্যাশের মত হয় এবং নিয়মিত জ্বর, ওজন কমে যাওয়া এবং লিম্ফ্যাটিক গ্ল্যান্ড ফুলে যায় । এছাড়া কুঁচকিতে ভেজা ফোস্কার মত দেখা দিতে পারে।


৩. ল্যাটেনট: এই অবস্থায় রোগ সুপ্ত অবস্থায় থাকে।


৪. টারশিয়ারি: এটা অনেকদিন চিকিৎসা না করলে হয়। এই অবস্থায় রোগীর হার্ট , চোখ, ব্রেইন এবং নার্ভে সিরিয়াস সমস্যা দেখা দেয় এবং রোগী সাধারনত বাচে না। এসকল লক্ষন বা উপসর্গ দেখা দিলে সিফিলিস টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হন আপনার সিফিলিস হয়েছে কিনা।


চিকিৎসা

এই রোগটি এতই ভয়ঙ্কর যে চিকিৎসা না করে ফেলে রাখলে ভয়ের পরিস্থিতি জন্ম দিতে পারে। আর এ রোগটি এমনই যে মানুষ এর কথা গোপন করেই রাখতে চায়। আর এর বেশি ভুক্তভোগী হয় মেয়েরা। কারন তারাই বেশি রোগ গোপন করে রাখতে পছন্দ করে।


এ রোগের চিকিৎসা অবশ্যই রেজিস্টার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে।


প্রতিরোধ

১. যৌন সঙ্গীর সিফিলিস আছে কিনা নিশ্চিত হন।

২. সিফিলিস থাকলে অবশ্যই, জোর করে হলেও চিকিৎসা করান।

৩. সিফিলিস আক্রান্তদের সাথে কোন ধরনের যৌন কারযক্রমে যাবেন না। কনডম ব্যাবহার করেও না।

৪. কমার্শিয়াল সেক্স ওয়ার্কার দের কাছে যাবেন না।

৫. রোগীকে ঘৃণা করবেন না, রোগকে ঘৃণা করুন।

৬. এই রোগ কোনক্রমেই পুষে রাখবেন না।

৭. অনিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন, অর্থাৎ রক্ত গ্রহনের পূর্বে এই রোগের পরিক্ষা না করে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত পরিসঞ্চালন করলে।

Post a Comment

Previous Post Next Post