ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করে, আর ক্যালসিয়াম শরীরে শোষণ করে কাজে লাগাতে দরকার হয় ভিটামিন ডি। এসব আজকাল প্রায় সবাই জানে। হাড় ক্ষয় রোধ করতে বা হাড় মজবুত করতে ওষুধের দোকান থেকে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডির কৌটা কিনে খাওয়াটা অনেকের কাছেই এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার। কিন্তু আসলে বয়স হলেই কি ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন ডি বড়ি খাওয়া উচিত?
গড়পড়তা একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ডি হলে চলে। রজঃনিবৃত্তির (মেনোপজ) পর নারীদের এবং সত্তরোর্ধ্ব পুরুষদের দরকার হয় একটু বেশি ক্যালসিয়াম—১২০০ মিলিগ্রাম। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েরও লাগে একটু বেশি। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, এমনকি উন্নত পশ্চিমা বিশ্বেও নারীরা প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৫০০ মিলিগ্রাম কম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করে থাকেন। জেনে রাখা ভালো যে ওষুধপত্র ছাড়া কীভাবে আমরা এগুলো বেশি করে পেতে পারি।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে ক্যালসিয়াম আছে। এক কাপ ননিবিহীন দুধ বা এক কাপ সয়া দুধে পাবেন ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। এক কাপ টকদইয়ে থাকে আরও বেশি—৪০০ মিলিগ্রামের মতো। আধা বাটি রান্না করা সবুজ পাতাঅলা শাক খেলে ১০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া হবে। এক গ্লাস কমলার রসে ১৫০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম আছে কাঁটাযুক্ত মাছ, ব্রকলি ইত্যাদি খাবারে। তারপরও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম বড়ি সেবন করা যাবে বটে, তবে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো গ্যাস্ট্রিক, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি। ক্যালসিয়াম কার্বনেট বড়ি তাই খাওয়ার পরপর খাওয়া উচিত। বেশ কিছু ওষুধ অন্ত্রে ক্যালসিয়ামের শোষণ কমিয়ে দেয়, বিশেষ করে যেসব ওষুধ অ্যাসিডিটি কমাতে ব্যবহৃত হয়। একসঙ্গে ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যালসিয়াম ওষুধ অন্ত্রে শোষিত হয় না, তাই বেশি মাত্রার ওষুধ খেয়ে লাভ হয় না। ক্যালসিয়াম অন্ত্রে শোষণ করতে ভিটামিন ডি লাগে, তাই ভিটামিন ডি কম থাকলে এটিসহ খেতে হবে। এ ছাড়া সূর্যালোকে আছে প্রচুর ভিটামিন ডি। ডিমের কুসুম, লোনা পানির মাছেও আছে এ ভিটামিন।
Post a Comment