পিরিয়ডের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী পিরিয়ড শুরুর ঠিক আগের দিন পর্যন্ত একটি মেনস্ট্রুয়াল সাইকলের মেয়াদ। প্রতি মাসের সাইকেলের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে ( সচরাচর ১৪ দিন নাগাদ ) একটি পরিণত ডিম্বাণু বা ম্যাচিওরড এগ মুক্ত হয়। একে ওভ্যুলেশন বলে। প্রচলিত গড় হিসেবে একটি মেনস্ট্রুয়াল সাইকলের মেয়াদ ২৮ দিন ধরা হলেও বাস্তবে এ সময়কাল এক নারী থেকে অন্যতে আলাদা হতে পারে। আপনার ক্ষেত্রে এই সময়কাল যদি নিয়মিতভাবে ২৩ থেকে ৩৫ দিনের হয় এবং কোনও অবস্থাতেই এই ব্যবধান ৭ দিনের বেশি ফারাকে না হয় , তবে সেটি স্বাভাবিক।
অধিকাংশ পিরিয়ড তিন থেকে পাঁচ দিন ধরে চলে। তবে যতদিন পর্যন্ত নিয়মিতভাবে একই সময় ধরে ( বা প্রায় ) হয়, ততদিন পর্যন্ত পিরিয়ডের প্রকৃত মেয়াদকাল নিয়ে মাথা ঘামানো হয় না।
অনিয়মিত বা ইরেগুলার সাইকল কি গর্ভধারণের সমস্যা বোঝায়?
এক থেকে অন্য মাসের সাইকলে ৭ দিনের বেশি ফারাক থাকা অনিয়মিত পিরিয়ড বলে ধরা হয়। হর্মোনে অসাম্য বা ইমব্যালান্সের কারণে ইরেগুলার পিরিয়ড বা খুব কম পিরিয়ড ( এক বা দু'দিন ধরে খুব হালকা ব্লিডিং বা স্পটিং ) হতে পারে।
দুটি পিরিয়ডের ফারাক ৩৫ দিনের বেশি হলে , প্রতি বছরে মাত্র চার থেকে ন'টি পিরিয়ড হলে এবং তারা প্রকৃতিতে অনিয়মিত ও অনিশ্চিত হলে আপনার পিরিয়ডকে ‘ অলিগোমেনোরিয়া ’ বলে ধরে নেওয়া হয়।
এর অর্থ এই নয় যে , আপনি কনসিভ করতে পারবেন না। আসলে এ ক্ষেত্রে ফার্টিলিটি কখন চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকে , তা অনুমানে অসুবিধা হয়। তাই স্বাভাবিকভাবে মিলিত হয়ে গর্ভধারণে সমস্যা হয়। ওভ্যুলেশন কোনদিন হবে তা বোঝার জন্য ওভ্যুলেশন - প্রেডিক্টর কিট আছে তবে তা সব মহিলার পক্ষে উপযোগী নয়। ওভ্যুলেশন অনুমানের আরেকটি পদ্ধতির নাম ফলিকুলার ট্র্যাকিং। সেখানে আল্ট্রাসাউন্ড মেশিনের সাহায্যে নিয়মিত স্ক্যান করে দেখা হয় কবে ওভ্যুলেশন হতে পারে।
বেশ কয়েকটি লাইফস্টাইল ফ্যাক্টরের ওপরেও অলিগোমেনোরিয়া নির্ভর করে, যেমন:
- স্ট্রেস
- অপুষ্টি
- অতিরিক্ত এক্সারসাইজ
- ওজন
- খুব বেশি সফর /জার্নি করা
মানসিক চাপ কমিয়ে, অতিরিক্ত এক্সারসাইজ না করেও ফিট থেকে এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্টের উপযোগী ব্যালান্সড ডায়েট খেয়ে হর্মোনাল ব্যালান্স - সহ শরীরকে কর্মক্ষমতার শীর্ষে নিয়ে যাওয়া যায়। সুতরাং, আপনি অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভুগলে ওপরে দেওয়া পরামর্শ হাতিয়ার করতে পারেন। তা ছাড়া অলিগোমেনোরিয়া হওয়ার পেছনে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম অথবা থাইরয়েডের রোগের মতো কোনও সুপ্ত সমস্যা রয়েছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভাল।
পিরিয়ড নিয়মিত ২১ দিনের কমে হয়ে চলেছে। এতে কি সমস্যা হতে পারে?
খুব শর্ট সাইকলে অনেক সময় সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে ওভ্যুলেশন কখনও খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায় ( যেমন , মোটামুটি ৭ দিনে )। সে ক্ষেত্রে মুক্তির আগে এগ পুরো ম্যাচিওরিটিতে পৌঁছনোর যথেষ্ট সময় পায় না। তা ছাড়া কিছু মহিলার ক্ষেত্রে ওভ্যুলেশন থেকে পরবর্তী পিরিয়ড পর্যন্ত সময়কাল ( লুটিয়াল ফেজ ) কমে যেতে পারে। এই সময় যদি ১০ দিনের কম হয় তা হলে ফার্টিলাইজড এগ ইমপ্লান্টেড হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পায় না। আপনার পিরিয়ড যদি খুব কাছাকাছি হয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Post a Comment