আপনার টিনএজ সন্তানদের সাথে যে বিষয়গুলো আলোচনা প্রয়োজন



একটি বিষয় খেয়াল করার মতো। এই যে, কিশোর-কিশোরী একে অপরের দ্বারা খুন হচ্ছে, বন্ধুর দ্বারা বান্ধবী হত্যা হচ্ছে, বন্ধুর বাসায় গ্রুপ-স্টাডি করতে গিয়ে কেউ মারা যাচ্ছে - এই ধরনের সংবাদগুলিতে ঘুরেফিরে ফাইনালি খুন বা হত্যা হওয়াটাই প্রাধান্য পাচ্ছে! কিন্তু ছেলে মেয়েদের অবাধ মেলামেশা, তাদের অবৈধ শারীরিক মেলামেশা, অশালীন নাটক সিনেমার উত্তেজনা, সারারাতের মদ খাওয়া পার্টি, এই দিবস - সেই দিবস সেলিব্রেশানের নামে অশালীনতা - এগুলির কিছুই খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না হত্যার চাইতে। আপনি এই সকল ঘটনায় পুলিশের বিবৃতিগুলি শুনবেন বা ব্রেকিং নিউজের টাইটেলগুলি দেখবেন - সেখানেও ❝হত্যাটাই❞ বেশি প্রাধান্য পায়। তারা যখন বিবৃতি দিচ্ছে অনেকটা হালকা-ভাবে এভাবে বলছে, ❝তাদের পূর্ব পরিচয় ছিলো, নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক হতো, মাঝে মাঝেই এখানে ওখানে সারারাত পার্টি করতো...❞ 

অথচ আমার দৃষ্টিতে ❝খুন বা হত্যা❞ এক্ষেত্রে একটা ফলাফল বা পরিণতি। কিন্তু হত্যা হবার আগ পর্যন্ত তারা যেগুলি করে গিয়েছে সেগুলিই বরং বন্ধ করার দরকার ছিলো ব্যক্তিগত ভাবে, পারিবারিক ভাবে, সামাজিক ভাবে এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রীয়ভাবে।

ধরুন কোনো দুই জাস্ট-ফ্রেন্ড শারীরিক সম্পর্কের পর খুন হলো তারই জাস্ট-ফ্রেন্ড দ্বারা। যেহেতু তিনি খুন হয়েছেন, এখন সকলেই মৃতের প্রতি বেশি সিমপ্যাথি দেখাচ্ছে এবং হত্যাকারীর প্রতি চরম ঘৃণা ও বিচার চাইছে। আমিও চাইবো অবশ্যই হত্যার বিচার হোক। কিন্তু ছেলে মেয়েদের অনৈতিক মেলামেশার কি হবে? তাদের সারারাতের পার্টির কি হবে? পার্টির আয়োজকদের কি হবে? এগুলির প্রোমোটারদের কি হবে? এমনকি এখন অনেকে এমন মনোভাবও প্রকাশ করছে যে, ❝সম্পর্ক ছিলো তো ছিলো, তাই বলে খুন করতে হবে? ভালো না লাগলে ছেড়ে দে!❞ ❝সারারাত পার্টি করবি কর, তাই বলে খুন?❞ এর অর্থ এই যে, প্রথম ধাপের ঐ কাজগুলি সামাজিকভাবে ও ধর্মীয়ভাবে তাদের কাছে আর ঘৃণিত কাজ নয়।

যাই হোক, আমি বিশ্বাস করি সামাজিক বিভিন্ন অবৈধ কাজ কমিয়ে আনতে রাষ্ট্র সবচাইতে দ্রুত ভূমিকা রাখতে পারে, তবুও আমার দিক থেকেও দায়িত্ব আছে। কিশোর কিশোরীদের, তরুণ তরুণীদের অঘটনগুলি আমার নিজ সন্তানদের কাছেও তুলে ধরি, পড়ে শোনাই, তারাও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে এগুলির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে। তাদের পরিণতি দেখে ওদেরও গা শিউরে উঠে! 

আপনার টিনএজ সন্তানদের সাথেও এগুলি বিষয়ে আলোচনার সম্পর্ক গড়ে তুলুন। অবৈধ কাজগুলির প্রতি তাদের অন্তরে ঘৃণা তৈরি করতে থাকুন। অবৈধ কাজগুলির প্রতি যদি অন্তরে সামান্য ঘৃণাটাও না থাকে, তাহলে তো ঈমানটাই হারিয়ে গেছে, তাই না?

Post a Comment

أحدث أقدم