হাত-পা এর চামড়া ওঠার কারণ ও সমাধান


হাতের পায়ের চামড়া ওঠা নিয়ে অনেকেরই ধারণা এটি সাধারণত শীতকালে হয়ে থাকে। শীতকালে চামড়া ওঠা স্বাভাবিক হলেও বছরের বারো মাসেই যদি হাত-পায়ের চামড়া ওঠে তাহলে এটি অবশ্যই সমস্যার বিষয়।

মেডিকেলের ভাষায় এটিকে "কেরাটোলাইসিস এক্সফোলিয়াটিচা" বলা হয়। সারা বছর হাত-পায়ের চামড়া উঠা স্বাভাবিক নয়।


হাত-পায়ের চামড়া ওঠার প্রথম কারনটি হচ্ছে জীনগত বা বংশগত। এর বাইরে পুষ্টিহীনতা ও ত্বকের পরিচর্যায় অবহেলা থেকেও চামড়া ওঠে। চামড়া ওঠে যাওয়াতে শরীরের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। কাজের ব্যস্ততার মধ্যে কিছুটা সময় বের করে শরীরের যত্ম নিলেই এ সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। আসুন কিভাবে একটু সময় বের করে যত্ম নেবেন সে কথাই জেনে নেয়া যাক।


(১).তিলের তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল ব্যবহার:

হাতের চামড়া ওঠে যাওয়ার জন্য তিলের তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল সমপরিমাণে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। যদি হাতের কাছে তিলের তেল না থাকে তাহলে বিকল্প হিসেবে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করতে পারেন। পায়ের চামড়ার জন্য মধু, গ্লিসারিন, লেবুর রস ও ঘুতকুমারীর রস একসঙ্গে মিশিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় লাগাতে হবে। বিশেষ করে রাতে খাবার শেষে যখন ঘুমোতে যাবেন তার ঠিক ৩০ মিনিট আগে লাগিয়ে রাখুন। তারপর পায়ে পাতলা মোজা পড়ে ঘুমোতে যান।


(২). সয়াবিনের গুঁড়ো: 

সয়াবিন গুঁড়ো হাত-পায়ের চামড়া ওঠে যাওয়া বন্ধে খুবই উপকারি। সয়াবিন কড়াইয়ে দিয়ে হালকা আঁচে কিছুক্ষণ নেড়ে গুঁড়ো করে নিন। এরপর সেটা দিয়ে হাত ও পা ধুতে পারেন। এটা পরিষ্কারের পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজারের ভূমিকা রাখে। এভাবে যদি একটু খেয়াল করে হাত ও পা পরিষ্কার রাখেন এবং রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে গ্লিসারিন ব্যবহার করেন তাহলে চামড়া উঠা বন্ধ হয়ে যাবে।


(৩). হাত-ভেজা রাখবেন না:

 রান্না ঘরের কাজ, গোসল কিংবা হাত-পায়ে পানি লাগতে পারে এমন অনেক কাজ রয়েছে। এ ধরনের পানির কাজ শেষ করার পর দ্রুত শুকনো তোয়ালে দিয়ে হাত মুছে শুকিয়ে ফেলুন। একইভাবে পা মুছে নিলে ভালো হয়। মনে রাখবেন যদি চামড়া ওঠে তাহেল কোন অবস্থাতেই হাত-পা ভেজা রাখবেন না। গ্লিসারিন মাখুন ঘুমানোর আগে। এছাড়া খাদ্যতালিকাতে সুষম খাদ্য রাখুন।যেমনঃ আমিষ,লৌহ, জিংক, ভিটামিন-এ,ই এবং সি। পুষ্টিহীনতার কারণে চামড়া ওঠা বন্ধ হবে।


(৪).লবণ ও শ্যাম্পু: 

 হালকা গরম পানির সঙ্গে লবণ এবং শ্যাম্পু মিশিয়ে হাতের তালুর পরিচর্যা করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। গরম পানির মধ্যে আধা চামচ শ্যাম্পু ও একটু লবণ দিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাত-পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। নির্দিষ্ট সময় শেষে ব্রাশ দিয়ে হাত-পা ঘষবেন। দেখবেন হাত-পায়ের মরা চামড়া উঠে যাবে

তবে হাত ও পায়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার অবশ্যই জরুরী।প্রশ্ন আসে ময়েশ্চারাইজার কিনবার সময় কিকি জিনিস সম্বলিত ময়েশ্চারাইজার টি কিনবেন?


আমেরিকান একাডেমি অফ ডার্মাটলজি এর মতে একটি আদর্শ ময়েশ্চারাইজার এ নিম্নলিখিত জিনিস গুলি থাকা বাঞ্চনীয়-

১)পেট্রলেটাল( অর্থাৎ  পেট্রলিয়াম অয়েল)

২)মিনারেল ওয়েল।

৩)সিয়া বাটার

৪) ল্যানলিন।

৫)ডায়ামেথিকন( একধরনের সিলিকন)।

এগুলি Occlusive হিসাবে অর্থাৎ  আর্দ্রতা আটকে রাখে।


আর কিছু জিনিস আছে যেগুলিকে বলে Humectants অর্থাৎ  আর্দ্রতা উপাদান কারক।যেমনঃ

১) হায়ালুরনিক এসিড

২) গ্লিসারিন।

৩) ল্যাকটিক এসিড

৪) ইউরিয়া।


- [ডা:মোহাম্মদ আলী, চীফ কনসালট্যান্ট, বিজিএমইএ]

Post a Comment

Previous Post Next Post